আহলে কোরান, আহলে হাদিস, লা-মাজহাবী দাবিদারদের আসল চেহারা
বর্তমান বাংলাদেশে আহলে কোরান, আহলে হাদিস, লা-মাজহাবী দাবিদারদের আসল চেহারা কি? তারা মূলত এমন সব ফেরকা তৈরি করে কি চান? কেনো তারা নানান খুটিনাটি খুঁজে বেড়ায় অহর্নিশ? তাদের এসব দাবির প্রেক্ষিতে তাদের নিকট কি দালিলিক ভিত্তি রয়েছে? এমনসব হাজারো প্রশ্ন জনমনে। আজকের আলোচনায় আমরা প্রাথমিকভাবে সরল আলোচনা করবো । যাতে করে আমরা পরবর্তীতে তাদের এমনসব মিঠা আলাপে না মজি।
আহলে কোরান কি?
আহলে কোরান নামক একটি ফেরকা বাংলাদেশে ইদানিং মাথাচারা দিয়েছে। যারা দাবি করে থাকে যে, আমরা কেবলমাত্র আল্লাহর কিতাব কোরান মাজিদ মানবো। হাদিস মানবো না। কেননা কোরান যেহেতু আছে, আমরা হাদিস মানতে যাবো কেন?
এমন একটি দাবিকে সামনে নিয়ে এসেই তারা সমাজে বহুকাল আগে থেকেই মীমাংসীত বিষয়াবলী নিয়ে খুব নাড়াচারা করতে পছন্দ করে। প্রশ্ন হলো- তারা কি সত্যিই তাই করতে চায়? না । তারা মূলত দুই কিসিমের লোক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এক. তারা ঈসায়ী মূসলিম নামক একটি খ্রিষ্টান মিশনারী থেকে অন্যটি হলো মূর্খ্য লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।
আমার জানামতে , আহলে কোরানের বেশিরভাগ লোকই সাধারণ ভাষাজ্ঞান পর্যন্ত জানে না। ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের জ্ঞান তো শূন্যের কোটায়। তারাই আবার কিনা আহলে কোরান বলে দাবী করে থাকে। তারা জানেই না যে, কোরান মূলত একটি জামেউল কালাম। এই কোরান মাজিদকে বুঝতে হলে যেসকল বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে, তা তাদের মোটেও নেই। ফলে তারা মূর্খতায় নিমজ্জিত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে, ঈসায়ী মুসলিম নামক খ্রিষ্টান মিশনারী তো আছেই। তারা তাদের মিশনের অংশ হিসাবেই প্রথমে এমন একটি ফেরকা চালু করে। এতে করে তাদের কাজটা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়। যেমন- তারা যদি কোনোভাবে হাদিসে রাসূল (সা:) কে বাদ দিতে পারে, তবেই তারা তাদের ঈসায়ী মুসলিম নাকট ফেরকাকে দাঁড় করাতে সক্ষম হবে। তাই তারা সুকৌশলে আহলে কোরান নামক ফেরকা তৈরি করতে অপচ্ষ্টা করে যাচ্ছে।
আহলে হাদিস কি?
আহলে হাদিস একটি ভাল ও উন্নত মত। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে যারা আহলে হাদিসের অনুসারী, বিশেষকরে যারা এই দলটির নেতৃত্বে আছেন, তারা কৌশল করে বা অজ্ঞাতসারে আহলে হাদিসের মূল পথ থেকে সরে গেছেন বা সরে যাচ্ছেন। সাথে তাদের অনুসারীরা তো আছেই।
যদিও আহলে হাদিস মানে হাদিসে রাসূল (সা:) এর অনুসারী বোঝায়, তবুও তারা কোনো না কোনোভাবে হাদিস থেকে দূরে সরে গিয়ে, সমাজে ফেতনা তৈরি করছে। ফলে এটিও সহিহ হাদিসের অমান্য করা। এবং পুরো সমাজের জন্য একটি রোগ হিসাবে কাজ করছে। ফলে বর্তমানা বাংলাদেশে আহলে হাদিস নামক দলটিও একটি বাতিল ফেরকায় রূপ নিয়েছে।
লা-মাজহাবী :
লা-মাজহাবী অনেকটা আহলে হাদিসের মতোই। তবে তারা নিজেদের লা-মাজহাবী বলে দাবি করলেও তারাও একটি মাজহাবের অনুসারী হয়েই কাজ করছে। সকল ক্ষেত্রে তারাও একটি মতের অনুসারী। ফলে তারা যে নিজেদের লা-মাজহাবী দাবি করে তা মূলত একটি বাজে দাবী।
মাজহাবী হওয়া সবার জন্য ফরজ কাজ নয়। কেউ যোগ্যতা সাপেক্ষে লা-মাজহাবী হওয়া দোষের কিছু নেই। বরং উত্তম কাজ। কিন্তু বাংলাদেশে ও ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে লা-মাজহাবী দলের কিছুলোক আছে, যারা মূলত সমাজে অশান্তি তৈরি করছে, অজ্ঞাতে অথবা কৌশল করে। ফলে তাদের েএই লা-মাজহাবী হবার দাবী মোটেও সঠিক নয়।
সর্বপরি কথা হলো, সমাজে অশান্তি আর বিশৃঙ্খলা তৈরি করা কোনো ধর্মের কাজ হতে পারে না। ফলে যুগযুগান্তর চলে আসা এবং হাজারো দালিলের মাধ্যমে প্রমানিত সত্যকে আপনি অস্বীকার করে সমাজে ফেতনা তৈরি করতে পারেন না। যা অবশ্যই নিষেধ। আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন।